বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪
ProdhanKhabor | Popular NewsPaper of Bangladesh
বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রদান ও ওষুধ বিতরণ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ড. মোশাররফ ফাউন্ডেশন কলেজ | প্রধান খবর তাহিরপুরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে তাহিরপুর উপজেলা ছাত্রদল দাউদকান্দিতে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যােগে ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী রাষ্ট্র পুনর্গঠনে ভাবনা শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত অনুপ্রবেশের দায়ে কুমিল্লার বুড়িচং সীমান্ত থেকে এক ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে বিজিবি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মতবিনিময় অনুষ্ঠিত ধোঁকাবাজদের বাংলার জমিনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দেয়া যাবে না: পীরসাহেব চরমোনাই দাউদকান্দিতে মাদরাসা অধ্যক্ষের অপসারণের দাবীতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সুস্থতা কামনায় কুমিল্লা উত্তর জেলা জাসাস'র দোয়া মোনাজাত আনন্দ মাল্টিমিডিয়া স্কুল এন্ড কলেজে স্মাট আরর্লি লার্নিং অনুষ্ঠানের উদ্বোধন দিনে সাংগঠনিক কাজ আর রাতে জায়নামাজে চোখের পানি ফেলতে হবে: শিবির সভাপতি জামায়াতে ইসলামী দাউদকান্দি পৌর শাখার সুধী সমাবেশ ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপে হামলার ঘটনায় কুমিল্লায় সাংবাদিকদের প্রতিবাদ সমাবেশ ঢাকাস্থ দাউদকান্দি জাতীয়তাবাদী যুবফোরাম'র কমিটিতে আনন্দ-সভাপতি, মেহেদী- সম্পাদক আশুলিয়ায় আরও অর্ধশতাধিক পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা ইউনিফর্ম অথবা ছবিযুক্ত পরিচয়পত্র থাকলেই শিক্ষার্থীরা হাফ পাস সুবিধা পাবে সপ্তাহে ৭দিন "রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত করেছিল ইসরায়েল! | প্রধান খবর দলের জন্য একনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন উত্তরজেলা যুবদলনেতা সেলিম খান
কুমিল্লার দাউদকান্দির একটি নদীর নাম

এখন আর খিরাই নদীতে জোঁয়ার আসেনা' তাঁর গায়ে হেলান দেয়া মাঠে সোনালী ফসল ফলেনা

এখন আর খিরাই নদীতে জোঁয়ার আসেনা' তাঁর  গায়ে হেলান দেয়া মাঠে সোনালী ফসল ফলেনা
খিরাই নদীর কোল ঘেঁষে আমাদের ফসলের মাঠ। ছোটবেলা থেকেই দেখতাম দাদা-বাবা, চাচা-জেঠারা নানান ফসল (আলু-ধান, সরিষা, গম, মশুরা, মুলা, কাউন ও কলুই)এর আবাধ করতো। খিরাই নদীরও তখন ভরা যৌবন ছিলো। জোয়ারের পানিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হতো নদীর চারিপাশ। গরুর উপর চড়ে কতবার যে নদী পাড়ি দিয়েছি তাঁর হিসেব নেই।

নদীর পার সুন্দর মতো ছেছে পিছলি খেতাম। সাঁতার প্রতিযোগিতা ও লাই খেলতাম। ১-২ ঘন্টা সাঁতার কাটার পর চোখ লাল হতো। তারপর বাড়ীতে গিয়ে কখনো কখনো মায়ের হাতে মার খেতাম।

সে সময়ে আমাদের আনন্দের ফসল ছিলো আলু। আর গম ছিলো বিরক্তের। কারন, আলু বড় হলে মাঠেই সিদ্ধ করে খেতাম। আর গম রোপন থেকে শুরু করে বাড়ী আনা পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল বিকাল কাউয়া তারাতে হতো। ফসলের মাঠ থেকে আলু ঘড়ে তোলার মৌসুম। সে অনেক আনন্দের ছিলো। জমি থেকে নতুন আলু তুলে বাড়ী নিয়ে সিদ্ধ করে আবার ফসলের মাঠে নিয়ে যেতাম। বদলীসহ অন্যজমির লোকজনও খুবই আনন্দ করে আলু সিদ্ধ খেতো। বড়াবড়রই, সিদ্ধ আলুর বোঝাটা আমি নিতাম আর যেতে যেতে খেতাম। ইরি ধান কাটার মৌসুম। বর্ষার পানি ছুঁই ছুঁই অবস্থা। কখনো কখনো জোয়ারে ডুবে যেতো। বদলিরা ধান কেটে ছোট ছোট আটি করে বেঁধে লম্বা রেল গাড়ী বানিয়ে পানিতে ভাষাতো। এগুলো আবার এক মাথায় ধরে টেনে বাড়ী নিয়ে আসতাম। সচ্ছ পানিতে সুযোগ পেয়ে অতিরিক্ত ডুবাতাম। পরিপূর্ণ বর্ষা যখন হতো। ফসলের জমিগুলো ১৫ /২০ ফুট পানির নিচে থাকতো। উপরে থৈই থৈই পানি। বাতাসে ডেউ হতো। ভোরের সকালটা ছিলো শাপলা ফুলের সমারোহে পরিপূর্ণ। পানিতে সেওলার পাহাড় হতো। আমরা তখন চোখ মেলে ডুব দিয়ে সেওলার ভিতরে ডুকতাম। আর বইচা মাছরা আমাদের সাথে খেলা করতো। সে সময় কারুকার্যপূর্ন অসাধারণ বইচা মাছ অহরহ দেখতাম।

নৌকা নিয়ে অনেক সময় প্রতিযোগিতা করতাম। বর্ষা শেষ কার্তিক মাস। পানি চলে যাওয়ায় পালা। আমাদের মধ্যে যাঁদের খিরাই নদীর পাড়ে জমি ছিলো। তাঁরা ছিলো খুবই ভাগ্যবান। কেননা, পুরো বর্ষাজুঁড়ে প্রাকৃতিক যে মাছ উৎপাদন হতো। তা খিরাই নদীতে পানির সাথে নামতো। যাঁদের জমি খিরাই নদীর পাড়ে ছিলো প্রত্যেকে ড্রেন করতো। ড্রেনের মাথায় আন্তা পেতে তার উপরে পেলুন জাল বসাতো। ছোট মাছগুলো আনতায় প্রবেশ করতো আর বড় মাছগুলো লাফিয়ে জালে পড়তো।

মাছ ধরার উৎসব থাকতো ১০-১৫দিন। আমরা নদীর পাড়ে ডেরা বানিয়ে ঘুমাতাম। গ্রামের বন্ধু কামাল, বিল্লাল, নাজির ও আমি প্রায়ই ডেরায় থাকতাম। সকাল হলে অনেকেই ওরা ভরে বাড়ীতে মাছ নিয়ে আসতাম। মাছগুলোর মধ্যে ছিলো, পুটি, সইল, বইচা, চান্দা, চিংড়িগুড়া, কই, টাকি, চেদুরী। মাঝে মাঝে বোয়াল, রুই, কাতল ও কাপ জাতীয় মাছ পাওয়া যেতে। সে সময়ে চোখেই দেখতাম শতশত প্রাকৃতিক মাছের একসাথে সারিবদ্ধ হয়ে পানির সাথে ড্রেনে প্রবেশ করতো। লাফিয়ে জালে উঠতো। এগুলো এখন স্বপ্নের মতো। কার্তিক মাস শেসে কৃষকের নানান প্রস্তুতী। নানান ফসলের রংয়ে আলোকিত হতো আমাদের মাঠ। আহা কীসুন্দরইনা ছিলো আমাদের ফসলের মাঠ-আমাদের শৈসব।

খীরাই নদীতে এখন আর জোয়ার আসেনা। আগের মতো গরু নিয়ে সাতাঁর কাটারও কোন সুযোগ নেই। ফসলের মাঠে নেই, সেই সোনালী ফসলের আবাদ। মাঠ যেন কোন অজ্ঞাত রোগে আক্রন্ত। দেখলে মনে হবে কোন যুদ্ধ বিধ্বস্ত পরিত্যক্ত কোন ভূমি। কোন জমিতে ফসল আছে কোনটায় নেই, আবার যেগুলোতে আছে এগুলোরও ভালো অবস্থা নেই। মশুরা-কলুই, সরিষা আর গম যেন স্বপ্নের মতো। পুরো মাঠ খুঁজে একখন্ড জমিও পাওয়া যাবে না। আগ্রাসী ফসল ভূট্ট দখল নিয়েছে। আবার হায়েনার মতো হানা দিয়েছে ভূমি খেকুরা। অনেক ফসলী জমি কেটে সাবার করে ফেলেছে। মাঠের একধিকে গর্ত আরেক দিকে পরিত্যক্ত এযেন আসলেই যুদ্ধ বিধ্বস্ত। আজ সকলে অনেকদিন পর ফসলের মাঠে গিয়ে প্রান ভরে হাঁটি। কিন্তু মাঠের এই অবস্থা দেখে ভিতরটা কেঁদে উঠে। আমরা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কী রেখে যাচ্ছি। আমরা আমাদের প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংস করছি। সরকারের কঠোর উদ্যোগ গ্রহন করা প্রয়োজন যেন ওই ভূমি দস্যুরা আর ফসলী জমি না কাটতে পারে। প্রকৃতির নিকট প্রত্যাশা খিরাই নদী আবার কানায় কানায় পরিপূর্ণ হবে পানিতে আর মাঠে হাসবে সোনালী ফসল।

লেখক: শরীফ প্রধান
১৬ জানুয়ারী ২০২২
সমাজকর্মী।
বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রদান ও ওষুধ  বিতরণ

বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রদান ও ওষুধ বিতরণ